শুক্রবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫
জামায়াত আমির

ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে জেনে-বুঝে সিদ্ধান্ত নিতে হবে

প্রকাশ: শুক্রবার, ০৫ সেপ্টেম্বর , ২০২৫
ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে জেনে-বুঝে সিদ্ধান্ত নিতে হবে

আগামীতে যারা যারা ক্ষমতায় আসবেন বা যেতে চান তাদেরকে বিবেকের কাছে দায়বদ্ধ ও আল্লাহর কাছে জবাবদিহির অনুভূতি নিয়ে সব কাজ করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমান। 

অতীতে যারা রাষ্ট্রের সম্পদ লুন্ঠন করে নিজেরা অর্থ-বিত্তের পাহাড় গড়েছেন জনগণকে তাদের হাতে ক্ষমতার চাবি তুলে না দেওয়ার আহবান জানিয়েছেন তিনি।

শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ইব্রাহিমপুরে মনিপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের ২নং শাখা এলাকায় ঢাকা-১৫ সংসদীয় আসনের কাফরুল থানা দক্ষিণ আয়োজিত ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। 

থানা আমির অধ্যাপক আনোয়ারুল করিমের সভাপতিত্বে এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের নায়েবে আমির আব্দুর রহমান মূসা। উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগরী উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য মো. শহিদুল্লাহ, শাহ আলম তুহিন প্রমুখ।

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, জামায়াতে ইসলামী ইসলামী আদর্শের ভিত্তিতে দেশকে কল্যাণ রাষ্ট্রে পরিণত করার জন্য দীর্ঘ পরিসরে আন্দোলন-সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে। মূলত, আর্ত-মানবতার কল্যাণ-মুক্তিই আমাদের রাজনীতির মূল উদ্দেশ্য। আমরা নেতিবাচক ধারার রাজনীতি পরিবর্তন করে দেশে ইতিবাচক ধারার রাজনীতি ফিরিয়ে আনার বিরামহীন সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছি। আমরা দেশ ও জাতিকে এমন একটি সমাজ উপহার দিতে চাই, যে সমাজে ধর্ম, বর্ণ, গোত্র নির্বিশেষে সকল মানুষের অধিকারের নিশ্চয়তা থাকবে। রাষ্ট্র কারো সাথে কোন ভাবেই বৈষম্যমূলক আচরণ করবে না। দেশ হবে দুর্নীতি, দুঃশাসন ও অপশাসন মুক্তি। আমরা যে আমাদের প্রতিশ্রুতি পালনে পুরোপুরি সক্ষম তা আমাদের দু’জন মন্ত্রী স্বার্থকভাবে প্রমাণ করে গেছেন। তারা ছিলেন দুর্নীতিমুক্ত, সৎ, যোগ্য ও অধিকতর দক্ষ। তাই সে কাঙ্ক্ষিত সমাজ প্রতিষ্ঠায় আগামীতে ইসলামী শক্তিকে ক্ষমতায় পাঠাতে হবে। 

এ সময় তিনি দ্বীন প্রতিষ্ঠায় সবাইকে যেকোনো ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত থাকার আহবান জানান। 

জামায়াত আমির বলেন, জুলাই বিপ্লবের মাধ্যমে আমাদের জন্য অপার সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু শঙ্কাটাও পুরোপুরি কেটে যায়নি। তাই আমাদেরকে খুবই সন্তর্পণে অগ্রসর হতে হবে। 

রাজনীতিতে মূল্যবোধের চর্চার প্রসঙ্গ তুলে আমিরে জামায়াত বলেন, আগামীতে যারা যারা ক্ষমতায় আসবেন বা যেতে চান তাদেরকে বিবেকের কাছে দায়বদ্ধ ও আল্লাহর কাছে জবাবদিহীর অনুভূতি নিয়ে সব কাজ সম্পাদন করতে হবে। কারণ, সবাইকে ফাঁকি দেওয়া সম্ভব হলেও আল্লাহকে ফাঁকি দেওয়া কোনোভাবেই সম্ভব নয়। আমরা এমন এক ইনসাফপূর্ণ নতুন বাংলাদেশ গড়তে চাই যেখানে ধর্ম, বর্ণ, গোত্র, নারী ও পুরুষ নির্বিশেষে সবাই সব প্রকার ভয় ও শঙ্কামুক্ত থাকবেন। অতীতে যারা ক্ষমতায় ছিলেন তারা জনগণকে ভয়ভীতিমুক্ত পরিবেশ উপহার দিতে পারেননি। তাই ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে আমাদেরকে জেনে-বুঝে আগামীর বাংলাদেশের জন্য সিদ্ধান্ত নিতে হবে। জনগণ সত্যের পক্ষে রায় দিলে ৫ বছরের মধ্যেই দেশকে ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত করাসহ ইতিবাচক পরিবর্তন করা সম্ভব। 

তিনি সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহবান জানান। 

ডা. শফিকুর বলেন, দেশিয় চিকিৎসায় যাতে সাধারণ মানুষ আস্থা রাখেন এবং চিকিৎসকরাও নিজেদের প্রতি আস্থা ফিরে পান সে জন্যই আমি দেশেই চিকিৎসা নেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি। মূলত, সুস্থতা-অসুস্থতা আল্লাহর হাতে। আমারা দেখেছি, বিদেশে চিকিৎসা নিয়ে অনেকেই কফিন বন্দি হয়ে ফিরছেন। আবার দেশেই চিকিৎসা নিয়ে অনেকেই পূর্ণ সুস্থ্যতা লাভ করছেন। তাই আল্লাহ চাইলে সব জায়গায় তার বান্দাদের সুস্থ রাখতে পারেন। চিকিৎসা বা চিকিৎসক উসিলা মাত্র। মূলত, আল্লাহ যাতে সুস্থ রাখতে চান, চিকিৎসকের উসিলায় তাকে সুস্থ রাখেন। তাই দেশিয় চিকিৎসার প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা ফেরাতে আমি দেশেই চিকিৎসা গ্রহণ করেছি। এতে দেশিয় চিকিৎসকরাও উজ্জীবিত হবেন। কারণ, সাধারণ মানুষের পক্ষে বিদেশে ব্যয়বহুল চিকিৎসা গ্রহণ সম্ভব নয়। 

আমিরে জামায়াত বলেন, চিকিৎসা একটি মহান ও সেবামূলক পেশা। তাই চিকিৎসকদের সেবার মানসিকতা নিয়ে সব শ্রেণির মানুষের চিকিৎসা করতে হবে। দেশের চিকিৎসার মান উন্নয়নের জন্য চিকিৎসা বিষয়ক শিক্ষাকে বৈশ্বিক মানসম্পন্নকরণ এবং দেশিয় হাসপাতালগুলো সর্বাধুনিক চিকিৎসা সরঞ্জামে সমৃদ্ধ করা জরুরি। একই সঙ্গে চিকিৎসা কেন্দ্রগুলোকে রোগীবান্ধব সেবা দেওয়াও দরকার। দেশিয় চিকিৎসায় সাধারণ মানুষের আস্থা ফেরাতে চিকিৎসা সহজলভ্য ও উন্নত চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে হবে। তাহলেই দেশিয় চিকিৎসার প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা ফিরে আসবে। 

 

সংবিধান নিয়ে প্রশ্ন ওঠে এমন পদক্ষেপ না নেওয়ার আহ্বান বিএনপির

প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর , ২০২৫
সংবিধান নিয়ে প্রশ্ন ওঠে এমন পদক্ষেপ না নেওয়ার আহ্বান বিএনপির

রাজনৈতিক দলগুলোকেই জুলাই সনদের সমস্ত সুপারিশ বাস্তবায়নে অঙ্গীকারবদ্ধ থাকতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ।


তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার সাংবিধানিকভাবেই গঠিত হয়েছে বলে মনে করে বিএনপি। সংবিধান নিয়ে প্রশ্ন ওঠে এমন কোনো বিষয়ে পদক্ষেপ না নিতে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আহ্বান জানিয়েছে দলটি।

বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন তিনি।

সালাহউদ্দিন বলেন, ২৯টি রাজনৈতিক দল লিখিত মতামত দিয়েছে। নির্বাহী আদেশ, অধ্যাদেশ জারি, অফিস আদেশসহ মোটাদাগে ৬টি মতামত পাওয়া গেছে।

সংবিধান সংশোধনের মৌলিক বিষয়ে ১৯টি বিষয় চিহ্নিত করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

এর আগে সকালে রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে এক গোলটেবিল আলোচনায় অংশ নেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য। সেখানে তিনি বলেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে একটি সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন করাই জাতির জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। তবে আমি মনে করি, নির্বাচন কমিশন যে রোডম্যাপ ঘোষণা করেছে, সে অনুযায়ী কমিশনের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। সরকারের অর্জন রয়েছে, ব্যর্থতাও রয়েছে। তবে সুষ্ঠু নির্বাচন করতে না পারলে অর্জন বলতে কিছুই থাকবে না অন্তর্বর্তী সরকারের।

শুধু নির্বাচিত জাতীয় সংসদই সংবিধান সংশোধনের অনুমোদন দিতে পারে। ভিন্ন কোনো প্রক্রিয়ায় গেলে- তা আদালতে চ্যালেঞ্জ হতে পারে।

নুরের জন্য কান্নায় ভেঙে পড়লেন ভিপি সাদিক কায়েম

প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর , ২০২৫
নুরের জন্য কান্নায় ভেঙে পড়লেন ভিপি সাদিক কায়েম

গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরকে দেখতে হাসপাতালে গিয়েছেন নবনির্বাচিত শিবির প্যানেলের সদস্যরা।


বৃহস্পতিবার বিকালে ঢাকা মেডিকেলে কলেজ হাসপাতালে ভর্তি নুরকে দেখতে যান তারা। এ সময় নুরের জন্য দোয়া করতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন তারা।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য ও দপ্তর সমন্বয়ক শাকিল উজ্জামান।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন ডাকসুর নবনির্বাচিত ভিপি সাদিক কায়েম, জিএস এস এম ফরহাদ, এজিএস মহিউদ্দীনসহ অন্য নেতারা। তারা নুরের দ্রুত সুস্থতা কামনা করেন এবং তার প্রতি সমবেদনা জানান।

এর আগে ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী ও অংশগ্রহণকারী সব শিক্ষার্থীকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন গণঅধিকার নুরুল হক নুর।

বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, অত্যন্ত ধৈর্য, কৌশল ও দক্ষতার সঙ্গে প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবিলা করে একটি প্রাণবন্ত ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজন করায় আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানাই।

এদিকে গত ৭ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান নিশ্চিত করে বলেন, ভিপি নুরুল হক নুরকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর নেওয়া হচ্ছে। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী চার-পাঁচ দিনের মধ্যেই তাকে সিঙ্গাপুর নেওয়া হবে।

গত ২৯ আগস্ট রাজধানীর বিজয়নগর দলটির কার্যালয়ের সামনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মারধর ও লাঠিপেটায় আহত হন গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর। ওই রাতেই তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে তিনি কেবিনে ভর্তি রয়েছেন।

জাকসু নির্বাচন বর্জন করল ছাত্রদল

প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর , ২০২৫
জাকসু নির্বাচন বর্জন করল ছাত্রদল

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদ (জাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন বর্জন করেছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের প্যানেল।

বৃহস্পতিবার বেলা পৌনে ৪ টায় ভাসানী হলে আয়োজিত এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেয় ছাত্রদল।  

সংবাদ সম্মেলনে তারা ভোট কারচুপির অভিযোগ এনেছে। তাদের অভিযোগ, শিবির সমর্থিত প্যানেলকে জেতাতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জামায়াতের সাথে আঁতাত করেছে।

ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার এক ঘণ্টার বেশি সময় আগে ভোট বর্জনের ঘোষণা দিল ছাত্রদলের প্যানেল।ছাত্রদল সমর্থিত জিএস পদপ্রার্থী তানজিলা হোসাইন বৈশাখী নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন।

হজের নিবন্ধনের শেষ সময় জানাল সরকার

প্রকাশ: বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর , ২০২৫
হজের নিবন্ধনের শেষ সময় জানাল সরকার

 


২০২৬ সালে হজে যেতে চাইলে আগামী ১২ অক্টোবরের মধ্যে করতে হবে নিবন্ধন। এদিন হজের প্রাথমিক নিবন্ধনের শেষ সময়সীমা।


সৌদি সরকারের নিবন্ধনের সময়সীমা অনুযায়ী এ সময় আর বাড়ানো হবে না বলে জানিয়েছে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়।

বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আবুবকর সিদ্দীক স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তা জানানো হয়েছে।

আগামী বছর বাংলাদেশ থেকে সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনা মিলিয়ে ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজ পালন করতে পারবেন। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ছাব্বিশের মে মাসের শেষ সপ্তাহে সৌদি আরবে পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে।

উৎসব ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট গ্রহণ শেষ, ফলের অপেক্ষা

প্রকাশ: মঙ্গলবার, ০৯ সেপ্টেম্বর , ২০২৫
উৎসব ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট গ্রহণ শেষ, ফলের অপেক্ষা

 

 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনে ভোট গ্রহণ শেষ হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে আটটি ভোটকেন্দ্রে ভোট গ্রহণ শুরু হয়ে শেষ হয় বিকাল ৪টার সময়। এখন ফলাফলের অপেক্ষা। জুলাই গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী ডাকসু নির্বাচন উৎসব ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে শেষ হয়েছে। প্রার্থীরা পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করলেও ভোটের বড় কোনো অনিয়মের খবর পাওয়া যায়নি।


আটটি কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত এ ভোটের ব্যালট গণনা করা হবে ১৪টি মেশিনে। এগুলোর কোনোটির স্ক্যানিং স্পিড- ঘণ্টায় ৫০০০, কোনোটির ৮০০০ পাতা। বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবন থেকে ভোটের ফল ঘোষণা করা হবে।

৪টার পর আর কাউকে কেন্দ্রে ঢুকতে দেওয়া হবে না। তবে কেন্দ্রের ভেতরে যারা লাইনে থাকবেন তারা চারটার পরেও ভোট দিতে পারবেন।

ডাকসু নির্বাচনে বিপুলসংখ্যক ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান জানিয়েছেন, ডাকসু নির্বাচনে স্বচ্ছতার ঘাটতি নেই। বিকাল ৩টার দিকে সিনেট ভবনের তিনটি কেন্দ্র পরিদর্শনে গিয়ে উপাচার্য সাংবাদিকদের বলেন, ইতোমধ্যে বিভিন্ন কেন্দ্রে ৭০ শতাংশের বেশি ভোট সংগ্রহ হয়েছে। চারটার পরও যেসব শিক্ষার্থী লাইনে থাকবেন, তাদের ভোট নেওয়া হবে।

উপাচার্য বলেন, কার্জন হলে ভুলক্রমে একটি ছোট সমস্যা হয়েছে। তার জন্য আমরা সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিয়েছি। তবু এ ঘটনার আমরা পুনরায় তদন্ত করে কেউ জড়িত থাকলে ব্যবস্থা নেব।

উল্লেখ্য, কার্জন হলে এক ভোটারকে দুটি ব্যালট দেওয়া হয়েছিল। পরে পোলিং অফিসারকে প্রত্যাহার করা হয়।

কড়া নিরাপত্তায় শান্তিপূর্ণভাবেই ভোট শেষ হয়েছে। তবে ভোট গ্রহণ নিয়ে প্রার্থীদের কেউ কেউ অভিযোগও করেছেন।

ছাত্রদল প্যানেলের সহসভাপতি (ভিপি) পদপ্রার্থী আবিদুল ইসলাম অভিযোগ করেন, ডাকসু নির্বাচনে অংশ নেওয়ার আকাঙ্ক্ষাকে ব্যাহত করা হয়েছে। দুপুর দুইটার দিকে ভোটদান শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।

নির্বাচনে বেশ কয়েকটি ব্যত্যয় হয়েছে অভিয়োগ করে ডাকসু নির্বাচনে ছাত্রশিবির–সমর্থিত প্যানেল ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোটের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) প্রার্থী এসএম ফরহাদ বলেন,  নির্বাচন কমিশনকে জানানো হলেও তারা ব্যবস্থা নিচ্ছে না। তারা পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ করছে।

নির্বাচনে ভোটকেন্দ্র থেকে পোলিং এজেন্টকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ করেছেন ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের সচেতন শিক্ষার্থী সংসদ প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদপ্রার্থী খায়রুল হাসান।

ডাকসু নির্বাচনে স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য প্যানেলের সহসভাপতি (ভিপি) প্রার্থী উমামা ফাতেমা বলেন, তিনি জয়ের ব্যাপারে যথেষ্ট আশাবাদী। সেই সঙ্গে উমামা বলেন, তার চাওয়া, ‘ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার ইলেকশন’ হোক।

টিএসসি ভোটকেন্দ্র পরিদর্শনে এসে বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী সংসদ প্যানেলের জিএস প্রার্থী আবু বাকের মজুমদার বলেন, আনন্দায়ক পরিবেশে ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে। প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে ভোটারদের দীর্ঘ লাইন আমরা দেখতে পেয়েছি। আমরা আশাবাদী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা তাদের যোগ্য নেতৃত্ব বেছে নেবেন।

ডাকসু নির্বাচনের ব্যালটে প্রগতি পক্ষের যে শক্তিগুলো আছে, সেই শক্তিগুলোর জয় হবে বলে মন্তব্য করেন প্রতিরোধ পর্ষদ প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) প্রার্থী মেঘমল্লার বসু।

ডাকসু নির্বাচনে স্বতন্ত্র ভিপি প্রার্থী শামীম হোসেন বলেছেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মসহ কয়েকটি গণমাধ্যমে ট্যাগিংয়ের মাধ্যমে, প্রোপাগান্ডার মাধ্যমে তার ভোট কমানোর চেষ্টা চলছে। 

এদিকে ডাকসু নির্বাচনের সংবাদ সংগ্রহের দায়িত্ব পালানকালে তরিকুল ইসলাম নামের এক সাংবাদিকের মৃত্যু হয়েছে। আজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হলের ভেতরে ডাকসু নির্বাচনের সংবাদ সংগ্রহ করছিলেন তরিকুল। দুপুর দেড়টার দিকে তিনি অচেতন হয়ে পড়েন। অচেতন অবস্থায় তরিকুলকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়। পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশপথে চেকপোস্ট বসানো হয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সেখানে মোতায়েন আছে। নিরাপত্তার জন্য টিএসসি এলাকায় পুলিশের একটি নিয়ন্ত্রণকক্ষ করা হয়। পাশাপাশি সব কটি প্রবেশপথে শিক্ষার্থীদের যাতায়াত নির্বিঘ্ন করতে পুলিশ সদস্যরা দায়িত্ব পালন করেন। পাশাপাশি ছিলেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্যরা।

ডাকসুতে এবার মোট ভোটারের সংখ্যা ৩৯ হাজার ৮৭৪ জন। পাঁচ ছাত্রী হলে ১৮ হাজার ৯৫৯ আর ১৩ ছাত্র হলে এই সংখ্যা ২০ হাজার ৯১৫ জন।

ডাকসুতে ২৮টি পদের বিপরীতে মোট ৪৭১ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। যার মধ্যে বিভিন্ন পদে ৬২ জন ছাত্রী রয়েছেন। আর প্রতি হল সংসদে ১৩টি করে ১৮টি হলে মোট পদের সংখ্যা ২৩৪টি। এসব পদে ভোটের লড়াইয়ে নেমেছেন ১ হাজার ৩৫ জন।