শুক্রবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা

তারেক রহমান-বাবরের খালাসের রায় আপিল বিভাগেও বহাল

প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ০৪ সেপ্টেম্বর , ২০২৫
তারেক রহমান-বাবরের খালাসের রায় আপিল বিভাগেও বহাল

বহুল আলোচিত ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত তারেক রহমান ও মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ সব আসামির খালাসের হাইকোর্টের রায় বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ।

বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টা ৫ মিনিটে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে ৬ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।

আদালতে তারেক রহমান-বাবরের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট এস এম শাহজাহান, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির।

আদালতে বিএনপির আইনজীবীদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, অ্যাডভোকেট গাজী কামরুল ইসলাম সজল, অ্যাডভোকেট আমিনুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট মাকসুদ উল্লাহ, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া, অ্যাডভোকেট জাকির হোসেন, অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান রায়হান বিশ্বাস,অ্যাডভোকেট সামসুল ইসলাম মুকুল, আজমল হোসেন খোকন।

রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনীক আর হক, আব্দুল জব্বার ভূঁইয়া, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আবদুল্লাহ আল মাহমুদ মাসুদ।

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে আওয়ামী লীগের সমাবেশে চালানো হয় নারকীয় গ্রেনেড হামলা। হামলার লক্ষ্য ছিলেন তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা শেখ হাসিনা। এই হামলায় নিহত হন মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী আইভি রহমানসহ ২৪ জন। আহত হন শতাধিক নেতাকর্মী। বাংলাদেশের রাজনীতিতে এটি ছিল এক কলঙ্কিত ও বিভীষিকাময় অধ্যায়, যা দেশবাসীকে আজও নাড়া দেয়।

হামলার পর রাজধানীর মতিঝিল থানায় দুটি মামলা হয়—একটি হত্যা মামলা, অপরটি বিস্ফোরক আইনে। মামলার শুরু থেকেই তদন্ত নিয়ে বিতর্ক দেখা দেয়। ঘটনার প্রকৃত তথ্য আড়াল করা এবং ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার অভিযোগ ওঠে। ২০০৭ সালের এক-এগারো পরবর্তী তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে নতুন করে তদন্ত শুরু করে সিআইডি। পরে ২০০৮ সালে আদালতে অভিযোগপত্র দেওয়া হয় ২২ জনের বিরুদ্ধে।

২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ পুনরায় ক্ষমতায় এলে অধিকতর তদন্ত করে সিআইডি। এতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ আরও ৩০ জনকে নতুন করে আসামি করা হয়। এরপর ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এ মামলার বিচার শুরু হয়।

২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল মামলার রায় ঘোষণা করে। রায়ে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ আরও ১৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এ ছাড়া আরও ১১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেওয়া হয়।

এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হলে হাইকোর্টে দীর্ঘ শুনানির পর ২০২৩ সালের ১ ডিসেম্বর রায় ঘোষণা করা হয়। রায়ে বিচারিক আদালতের দেওয়া দণ্ড বাতিল করে হাইকোর্ট সব আসামিকে খালাস দেন। হাইকোর্টের রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশিত হয় ২০২৩ সালের ১৯ ডিসেম্বর।

হাইকোর্ট রায়ে উল্লেখ করে, ২১ আগস্টের এই হামলা ছিল দেশের ইতিহাসে একটি ভয়াবহ ও মর্মান্তিক ঘটনা। তবে মামলার তদন্ত পর্যাপ্ত ও স্বাধীনভাবে হয়নি। তদন্তে অসঙ্গতি ও দুর্বলতা ছিল। এ ধরনের স্পর্শকাতর ঘটনায় নিরপেক্ষ তদন্ত না হওয়ায় ন্যায়বিচার প্রশ্নবিদ্ধ হয়। রায়ে আরও বলা হয়, এমন ঘটনায় নতুন করে যথাযথ ও পেশাদার সংস্থার মাধ্যমে তদন্ত হওয়া উচিত। এজন্য মামলার নথিপত্র স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে নির্দেশ দেওয়া হয়।

হাইকোর্টের দেওয়া এই খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। তারা দাবি করে, বিচারিক আদালতের দেওয়া সাজা যথাযথ ছিল এবং সেটিই বহাল রাখা উচিত। অন্যদিকে আসামিপক্ষ হাইকোর্টের রায় বহাল রাখার পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে। আপিল বিভাগে এই মামলার শুনানি শুরু হয় গত ১৭ জুলাই। এরপর ধারাবাহিকভাবে ৩১ জুলাই, ১৯, ২০ এবং ২১ আগস্ট পাঁচ দিন ধরে শুনানি চলে। শুনানি শেষে আদালত আজকের দিনটি রায়ের জন্য নির্ধারণ করে।

রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আবদুল্লাহ আল মাহমুদ, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আবু সাদাত মো. সায়েম ভূঞা ও সাদিয়া আফরিন। আসামিপক্ষে শুনানিতে অংশ নেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম শাহজাহান ও শিশির মনির।

 

সংবিধান নিয়ে প্রশ্ন ওঠে এমন পদক্ষেপ না নেওয়ার আহ্বান বিএনপির

প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর , ২০২৫
সংবিধান নিয়ে প্রশ্ন ওঠে এমন পদক্ষেপ না নেওয়ার আহ্বান বিএনপির

রাজনৈতিক দলগুলোকেই জুলাই সনদের সমস্ত সুপারিশ বাস্তবায়নে অঙ্গীকারবদ্ধ থাকতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ।


তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার সাংবিধানিকভাবেই গঠিত হয়েছে বলে মনে করে বিএনপি। সংবিধান নিয়ে প্রশ্ন ওঠে এমন কোনো বিষয়ে পদক্ষেপ না নিতে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আহ্বান জানিয়েছে দলটি।

বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন তিনি।

সালাহউদ্দিন বলেন, ২৯টি রাজনৈতিক দল লিখিত মতামত দিয়েছে। নির্বাহী আদেশ, অধ্যাদেশ জারি, অফিস আদেশসহ মোটাদাগে ৬টি মতামত পাওয়া গেছে।

সংবিধান সংশোধনের মৌলিক বিষয়ে ১৯টি বিষয় চিহ্নিত করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

এর আগে সকালে রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে এক গোলটেবিল আলোচনায় অংশ নেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য। সেখানে তিনি বলেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে একটি সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন করাই জাতির জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। তবে আমি মনে করি, নির্বাচন কমিশন যে রোডম্যাপ ঘোষণা করেছে, সে অনুযায়ী কমিশনের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। সরকারের অর্জন রয়েছে, ব্যর্থতাও রয়েছে। তবে সুষ্ঠু নির্বাচন করতে না পারলে অর্জন বলতে কিছুই থাকবে না অন্তর্বর্তী সরকারের।

শুধু নির্বাচিত জাতীয় সংসদই সংবিধান সংশোধনের অনুমোদন দিতে পারে। ভিন্ন কোনো প্রক্রিয়ায় গেলে- তা আদালতে চ্যালেঞ্জ হতে পারে।

নুরের জন্য কান্নায় ভেঙে পড়লেন ভিপি সাদিক কায়েম

প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর , ২০২৫
নুরের জন্য কান্নায় ভেঙে পড়লেন ভিপি সাদিক কায়েম

গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরকে দেখতে হাসপাতালে গিয়েছেন নবনির্বাচিত শিবির প্যানেলের সদস্যরা।


বৃহস্পতিবার বিকালে ঢাকা মেডিকেলে কলেজ হাসপাতালে ভর্তি নুরকে দেখতে যান তারা। এ সময় নুরের জন্য দোয়া করতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন তারা।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য ও দপ্তর সমন্বয়ক শাকিল উজ্জামান।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন ডাকসুর নবনির্বাচিত ভিপি সাদিক কায়েম, জিএস এস এম ফরহাদ, এজিএস মহিউদ্দীনসহ অন্য নেতারা। তারা নুরের দ্রুত সুস্থতা কামনা করেন এবং তার প্রতি সমবেদনা জানান।

এর আগে ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী ও অংশগ্রহণকারী সব শিক্ষার্থীকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন গণঅধিকার নুরুল হক নুর।

বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, অত্যন্ত ধৈর্য, কৌশল ও দক্ষতার সঙ্গে প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবিলা করে একটি প্রাণবন্ত ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজন করায় আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানাই।

এদিকে গত ৭ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান নিশ্চিত করে বলেন, ভিপি নুরুল হক নুরকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর নেওয়া হচ্ছে। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী চার-পাঁচ দিনের মধ্যেই তাকে সিঙ্গাপুর নেওয়া হবে।

গত ২৯ আগস্ট রাজধানীর বিজয়নগর দলটির কার্যালয়ের সামনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মারধর ও লাঠিপেটায় আহত হন গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর। ওই রাতেই তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে তিনি কেবিনে ভর্তি রয়েছেন।

জাকসু নির্বাচন বর্জন করল ছাত্রদল

প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর , ২০২৫
জাকসু নির্বাচন বর্জন করল ছাত্রদল

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদ (জাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন বর্জন করেছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের প্যানেল।

বৃহস্পতিবার বেলা পৌনে ৪ টায় ভাসানী হলে আয়োজিত এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেয় ছাত্রদল।  

সংবাদ সম্মেলনে তারা ভোট কারচুপির অভিযোগ এনেছে। তাদের অভিযোগ, শিবির সমর্থিত প্যানেলকে জেতাতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জামায়াতের সাথে আঁতাত করেছে।

ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার এক ঘণ্টার বেশি সময় আগে ভোট বর্জনের ঘোষণা দিল ছাত্রদলের প্যানেল।ছাত্রদল সমর্থিত জিএস পদপ্রার্থী তানজিলা হোসাইন বৈশাখী নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন।

হজের নিবন্ধনের শেষ সময় জানাল সরকার

প্রকাশ: বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর , ২০২৫
হজের নিবন্ধনের শেষ সময় জানাল সরকার

 


২০২৬ সালে হজে যেতে চাইলে আগামী ১২ অক্টোবরের মধ্যে করতে হবে নিবন্ধন। এদিন হজের প্রাথমিক নিবন্ধনের শেষ সময়সীমা।


সৌদি সরকারের নিবন্ধনের সময়সীমা অনুযায়ী এ সময় আর বাড়ানো হবে না বলে জানিয়েছে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়।

বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আবুবকর সিদ্দীক স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তা জানানো হয়েছে।

আগামী বছর বাংলাদেশ থেকে সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনা মিলিয়ে ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজ পালন করতে পারবেন। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ছাব্বিশের মে মাসের শেষ সপ্তাহে সৌদি আরবে পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে।

উৎসব ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট গ্রহণ শেষ, ফলের অপেক্ষা

প্রকাশ: মঙ্গলবার, ০৯ সেপ্টেম্বর , ২০২৫
উৎসব ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট গ্রহণ শেষ, ফলের অপেক্ষা

 

 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনে ভোট গ্রহণ শেষ হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে আটটি ভোটকেন্দ্রে ভোট গ্রহণ শুরু হয়ে শেষ হয় বিকাল ৪টার সময়। এখন ফলাফলের অপেক্ষা। জুলাই গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী ডাকসু নির্বাচন উৎসব ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে শেষ হয়েছে। প্রার্থীরা পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করলেও ভোটের বড় কোনো অনিয়মের খবর পাওয়া যায়নি।


আটটি কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত এ ভোটের ব্যালট গণনা করা হবে ১৪টি মেশিনে। এগুলোর কোনোটির স্ক্যানিং স্পিড- ঘণ্টায় ৫০০০, কোনোটির ৮০০০ পাতা। বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবন থেকে ভোটের ফল ঘোষণা করা হবে।

৪টার পর আর কাউকে কেন্দ্রে ঢুকতে দেওয়া হবে না। তবে কেন্দ্রের ভেতরে যারা লাইনে থাকবেন তারা চারটার পরেও ভোট দিতে পারবেন।

ডাকসু নির্বাচনে বিপুলসংখ্যক ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান জানিয়েছেন, ডাকসু নির্বাচনে স্বচ্ছতার ঘাটতি নেই। বিকাল ৩টার দিকে সিনেট ভবনের তিনটি কেন্দ্র পরিদর্শনে গিয়ে উপাচার্য সাংবাদিকদের বলেন, ইতোমধ্যে বিভিন্ন কেন্দ্রে ৭০ শতাংশের বেশি ভোট সংগ্রহ হয়েছে। চারটার পরও যেসব শিক্ষার্থী লাইনে থাকবেন, তাদের ভোট নেওয়া হবে।

উপাচার্য বলেন, কার্জন হলে ভুলক্রমে একটি ছোট সমস্যা হয়েছে। তার জন্য আমরা সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিয়েছি। তবু এ ঘটনার আমরা পুনরায় তদন্ত করে কেউ জড়িত থাকলে ব্যবস্থা নেব।

উল্লেখ্য, কার্জন হলে এক ভোটারকে দুটি ব্যালট দেওয়া হয়েছিল। পরে পোলিং অফিসারকে প্রত্যাহার করা হয়।

কড়া নিরাপত্তায় শান্তিপূর্ণভাবেই ভোট শেষ হয়েছে। তবে ভোট গ্রহণ নিয়ে প্রার্থীদের কেউ কেউ অভিযোগও করেছেন।

ছাত্রদল প্যানেলের সহসভাপতি (ভিপি) পদপ্রার্থী আবিদুল ইসলাম অভিযোগ করেন, ডাকসু নির্বাচনে অংশ নেওয়ার আকাঙ্ক্ষাকে ব্যাহত করা হয়েছে। দুপুর দুইটার দিকে ভোটদান শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।

নির্বাচনে বেশ কয়েকটি ব্যত্যয় হয়েছে অভিয়োগ করে ডাকসু নির্বাচনে ছাত্রশিবির–সমর্থিত প্যানেল ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোটের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) প্রার্থী এসএম ফরহাদ বলেন,  নির্বাচন কমিশনকে জানানো হলেও তারা ব্যবস্থা নিচ্ছে না। তারা পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ করছে।

নির্বাচনে ভোটকেন্দ্র থেকে পোলিং এজেন্টকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ করেছেন ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের সচেতন শিক্ষার্থী সংসদ প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদপ্রার্থী খায়রুল হাসান।

ডাকসু নির্বাচনে স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য প্যানেলের সহসভাপতি (ভিপি) প্রার্থী উমামা ফাতেমা বলেন, তিনি জয়ের ব্যাপারে যথেষ্ট আশাবাদী। সেই সঙ্গে উমামা বলেন, তার চাওয়া, ‘ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার ইলেকশন’ হোক।

টিএসসি ভোটকেন্দ্র পরিদর্শনে এসে বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী সংসদ প্যানেলের জিএস প্রার্থী আবু বাকের মজুমদার বলেন, আনন্দায়ক পরিবেশে ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে। প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে ভোটারদের দীর্ঘ লাইন আমরা দেখতে পেয়েছি। আমরা আশাবাদী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা তাদের যোগ্য নেতৃত্ব বেছে নেবেন।

ডাকসু নির্বাচনের ব্যালটে প্রগতি পক্ষের যে শক্তিগুলো আছে, সেই শক্তিগুলোর জয় হবে বলে মন্তব্য করেন প্রতিরোধ পর্ষদ প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) প্রার্থী মেঘমল্লার বসু।

ডাকসু নির্বাচনে স্বতন্ত্র ভিপি প্রার্থী শামীম হোসেন বলেছেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মসহ কয়েকটি গণমাধ্যমে ট্যাগিংয়ের মাধ্যমে, প্রোপাগান্ডার মাধ্যমে তার ভোট কমানোর চেষ্টা চলছে। 

এদিকে ডাকসু নির্বাচনের সংবাদ সংগ্রহের দায়িত্ব পালানকালে তরিকুল ইসলাম নামের এক সাংবাদিকের মৃত্যু হয়েছে। আজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হলের ভেতরে ডাকসু নির্বাচনের সংবাদ সংগ্রহ করছিলেন তরিকুল। দুপুর দেড়টার দিকে তিনি অচেতন হয়ে পড়েন। অচেতন অবস্থায় তরিকুলকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়। পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশপথে চেকপোস্ট বসানো হয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সেখানে মোতায়েন আছে। নিরাপত্তার জন্য টিএসসি এলাকায় পুলিশের একটি নিয়ন্ত্রণকক্ষ করা হয়। পাশাপাশি সব কটি প্রবেশপথে শিক্ষার্থীদের যাতায়াত নির্বিঘ্ন করতে পুলিশ সদস্যরা দায়িত্ব পালন করেন। পাশাপাশি ছিলেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্যরা।

ডাকসুতে এবার মোট ভোটারের সংখ্যা ৩৯ হাজার ৮৭৪ জন। পাঁচ ছাত্রী হলে ১৮ হাজার ৯৫৯ আর ১৩ ছাত্র হলে এই সংখ্যা ২০ হাজার ৯১৫ জন।

ডাকসুতে ২৮টি পদের বিপরীতে মোট ৪৭১ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। যার মধ্যে বিভিন্ন পদে ৬২ জন ছাত্রী রয়েছেন। আর প্রতি হল সংসদে ১৩টি করে ১৮টি হলে মোট পদের সংখ্যা ২৩৪টি। এসব পদে ভোটের লড়াইয়ে নেমেছেন ১ হাজার ৩৫ জন।