শুক্রবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সুন্দরবন থেকে আট জেলে আটক

প্রকাশ: বুধবার, ০৩ সেপ্টেম্বর , ২০২৫
সুন্দরবন থেকে আট জেলে আটক

পশ্চিম সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জের অভয়ারণ্যে ঢুকে মাছ শিকারের সময় আট জেলেকে আটক করেছেন বনবিভাগের সদস্যরা। মঙ্গলবার সকালে নোটাবেঁকী অভয়ারণ্য থেকে তাদের আটক করা হয়। এসময় চারটি দা, ২টি বৈঠা ও দু’টি ককসিটে সংরক্ষিত প্রায় ৩০ কেজি সাদা মাছ জব্দ করা হয়। 

আটক জেলেরা হলেন- শ্যামনগর উপজেলার কৈখালী ইউনিয়নের পূর্ব কৈখালী গ্রামের আব্দুস সবুর (৩৬), আব্দুল আলিম (৪৫), বুলবুল গাজী (৩৪), মতিউর রহমান (২৪), মহিবুল্লাহ (২৭), আফজাল মোল্যা (২৫), জয়াখালী গ্রামের নুরুজ্জামান গাজী (৩৯) ও সাহেবখালী গ্রামের আনোয়ারুল মোড়ল (৪১)। 

সহকারী বন সংরক্ষক মো. ফজলুল হক জানান, দু’দিন আগে আটক জেলে অবৈধভাবে সুন্দরবনে প্রবেশ করেন। প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও তারা অভয়ারণ্য এলাকায় গিয়ে মাছ শিকার করছিলেন। বন আইনের মামলায় মঙ্গলবার দুপুরে আটক জেলেদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

ফের বেড়েছে পদ্মার পানি, বিপাকে ১৫ চরের মানুষ

প্রকাশ: রোববার, ০৭ সেপ্টেম্বর , ২০২৫
ফের বেড়েছে পদ্মার পানি, বিপাকে ১৫ চরের মানুষ

রাজশাহীর বাঘায় পদ্মার চরে আবারও নতুনভাবে প্লাবিত হয়ে বাড়ির উঠানে উঠেছে পানি। পানি বৃদ্ধিতে পদ্মার ১৫টি চরের মানুষ নতুনভাবে গরু-ছাগল নিয়ে পড়েছেন বেকায়দায়। 

রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) সকালের দিকে আতারপাড়া চরে এমন দৃশ্য চোখে পড়ে।

পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধির কারণে আতারপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পানি মাড়িয়ে স্কুলে আসতে পারছে না। এর মধ্যে চৌমাদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একই অবস্থা।

পানি বৃদ্ধির কারণে আতারপাড়া, চৌমাদিয়া, দিয়ারকাদিরপুর চরের নিচু এলাকার প্রতিটি বাড়ির উঠানে পানি উঠেছে। এতে পদ্মার ১৫টি চরের মানুষ নতুনভাবে গরু-ছাগল নিয়ে পড়েছেন বেকায়দায়।

চৌমাদিয়া চরের সলেমান হোসেন বলেন, এই চরে ২০০ পরিবারে প্রতিটি বাড়ির উঠানে নতুনভাবে পানি প্রবেশ করেছে। তারা কোথাও যেতে পারছেন না। গরু-ছাগল নিয়েও পড়েছেন মহাসমস্যায়।


চকরাজাপুর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের চৌমাদিয়া চরের সাবেক মেম্বার আবদুর রহমান বলেন, পদ্মার মধ্যে ১৫টি চরের আয়তন ৪৬ কিলোমিটার। জনসংখ্যা সাড়ে ১৫ হাজার। জমির পরিমাণ ৬ হাজার একর। মানুষের বসবাস প্রায় সাড়ে ৩ হাজার। জীবন বাজি রেখে চরে বসবাস করি। নিজের যতটুকু জমি ছিল, সব ভাঙনে চলে গেল। এখন নতুনভাবে পদ্মার পানি বৃদ্ধিতে নিরুপায় হয়ে পড়েছি। কোনো উপায় খুঁজে পাচ্ছি না, এখন কথায় যাব চিন্তায় আছি।

কালিদাসখালী চরের স্কুল শিক্ষক গোলাম মোস্তফা বলেন, পদ্মা ভাঙনের কারণে চকরাজাপুর মোজার চিহ্ন হারিয়ে গেছে। কালিদাসখালী চরের তিন ভাগের দুই ভাই হারিয়ে গেছে। 

এ বিষয়ে চকরাজাপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আজিজুল আযম বলেন, পদ্মার পানি নতুনভাবে বৃদ্ধির বিষয়ে কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।

রাজশাহী পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) গেজ রিডার এনামুল হক বলেন, রোববার (৭ সেপ্টম্বর) সকাল ৮টায় পদ্মা নদীর পানির উচ্চতা ছিল ১৬ দশমিক ৮২ মিটার। বিপৎসীমা ১৮ দশমিক ৫ মিটার।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাম্মী আক্তার বলেন, এ বিষয়ে অবগত হয়েছি। 

রাজবাড়ীতে নুরাল পাগলার দরবারে হামলার ঘটনায় একজন নিহত

প্রকাশ: শুক্রবার, ০৫ সেপ্টেম্বর , ২০২৫
রাজবাড়ীতে নুরাল পাগলার দরবারে হামলার ঘটনায় একজন নিহত

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে নুরুল হক ওরফে নুরাল পাগলার দরবার শরিফে হামলা-ভাঙচুরের ঘটনায় রাসেল মোল্লা (২৮) নামের এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। সংঘর্ষে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর তাঁর মৃত্যু হয়।

গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) শরিফ ইসলাম এবং ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ওয়ার্ড মাস্টার আতিয়ার রহমান প্রথম আলোকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক ব্যক্তি।

আজ শুক্রবার জুমার নামাজের পর বেলা তিনটা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত দফায় দফায় দরবারে হামলা করে একদল লোক। তাঁরা শরিয়ত–পরিপন্থীভাবে দাফনের অভিযোগ তুলে নুরাল পাগলার লাশ কবর থেকে তুলে পুড়িয়ে দেন। উপজেলা ইমান-আকিদা রক্ষা কমিটির পূর্বঘোষিত বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে একদল লোকের এই হামলায় পুলিশ সদস্যসহ অন্তত অর্ধশত ব্যক্তি আহত হন। সেখানে পুলিশের দুটি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) গাড়ি ভাঙচুর করা হয়।

নিহত রাসেল মোল্লা গোয়ালন্দ উপজেলার দেবগ্রাম ইউনিয়নের পূর্ব তেনাপচা ঝুটু মিস্ত্রি পাড়ার বাসিন্দা আজাদ মোল্লার ছেলে। তিনি নুরাল পাগলার দরবারের খাদেম ছিলেন বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।

নুরুল হক ওরফে নুরাল পাগলার দরবার শরিফে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করা হয়। আজ শুক্রবার বিকেলে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে
নুরুল হক ওরফে নুরাল পাগলার দরবার শরিফে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করা হয়। আজ শুক্রবার বিকেলে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দেছবি: প্রথম আলো

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গোয়ালন্দ পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডে নিজ বাড়িতে অনেক বছর আগে দরবার শরিফ গড়ে তোলেন নুরুল হক। গত ২৩ আগস্ট বার্ধক্যের কারণে মারা যান নুরুল হক। ওই দিন রাতে মাটি থেকে কয়েক ফুট উঁচুতে বিশেষ কায়দায় আস্তানায় তাঁর লাশ দাফন করেন ভক্তরা। এরপর বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে কবর সমতল করাসহ কয়েকটি দাবি জানায় স্থানীয় আলেম সমাজ।
আরও পড়ুন

এ নিয়ে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে উপজেলা ইমান-আকিদা রক্ষা কমিটি ও নুরাল পাগলার পরিবারের সদস্যদের কয়েক দফায় বৈঠক হয়। তবে কবর নিচু না করায় দুই দফা সংবাদ সম্মেলন করে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেয় ইমান-আকিদা রক্ষা কমিটি। তারা বৃহস্পতিবারের মধ্যে কবর সমতলসহ বিভিন্ন দাবি জানায়। অন্যথায় শুক্রবার জুমার নামাজের পর গোয়ালন্দ আনসার ক্লাব মাঠে বিক্ষোভ সমাবেশ ও পরে ‘মার্চ ফর গোয়ালন্দ’ কর্মসূচি পালন করার ঘোষণা দেয়।

তবে অভিযোগের বিরুষে নুরাল পাগলার ছেলে মেহেদী নূর জিলানী গত ২ সেপ্টেম্বর প্রথম আলোকে বলেছিলেন, তাঁর বাবার নির্দেশ মতো কিছুটা উঁচু করে ইসলামের বিধান মেনে দাফন করা হয়েছে। তিন থেকে চার ফুট উঁচু হতে পারে। তাঁদের বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রোপাগাণ্ডা ছড়ানো হচ্ছে। তবে কবর নিচু করতে ভক্ত ও খাদেমদের সঙ্গে আলোচনা চলছে।
সেনাসদস্যরা ঘটনাস্থলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন। শুক্রবার বিকেলে গোয়ালন্দের জুড়ান মোল্লার পাড়ায়
সেনাসদস্যরা ঘটনাস্থলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন। শুক্রবার বিকেলে গোয়ালন্দের জুড়ান মোল্লার পাড়ায়ছবি: প্রথম আলো

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী আজ জুমার নামাজের পর আনসার ক্লাব চত্বরে বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে উপজেলা ইমান-আকিদা রক্ষা কমিটি। বেলা দুইটার পর থেকে আনসার ক্লাবে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে জড়ো হতে থাকেন শত শত মানুষ। বেলা আড়াইটার দিকে হাতুড়ি, শাবল ও লাঠিসোঁটা নিয়ে একদল লোক মিছিল নিয়ে আসে। এ সময় আয়োজকদের পক্ষ থেকে লাঠিসোঁটা, হাতুড়ি মঞ্চে জমা দিতে বলা হয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তাঁদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করলে উত্তেজনা দেখা দেয়। একপর্যায়ে মঞ্চে বক্তব্য চলাকালে কিছু লোক পুলিশের ওপর হামলা করে দুটি গাড়ি এবং ইউএনওর গাড়ি ভাঙচুর করেন। এ সময় পুলিশের ছয় সদস্য আহত হন।

প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন বলেন, বেলা তিনটার দিকে মঞ্চ থেকে ইমান-আকিদা রক্ষা কমিটির আহ্বায়ক মাওলানা জালাল উদ্দিন প্রামাণিক, সদস্যসচিব বিএনপি নেতা আইয়ুব আলী খান সবাইকে সমাবেশে থাকার আহ্বান জানান। কিন্তু উত্তেজিত লোকজন মিছিল নিয়ে নুরাল পাগলার দরবারে হামলা করেন। ভেতর থেকে প্রতিরোধের চেষ্টা করেন নুরাল পাগলার ভক্তরা। এ সময় ইটপাটকেল নিক্ষেপসহ সংঘর্ষে দুই পক্ষের অন্তত অর্ধশত ব্যক্তি আহত হন। এ সময় কিছু লোক দরবারের দেয়াল টপকে ভেতরে ঢুকে আগুন ধরিয়ে দেন এবং মালামাল লুটপাট করেন। একপর্যায়ে বিকেল পাঁচটার দিকে নুরাল পাগলার লাশ কবর থেকে তুলে গোয়ালন্দ পদ্মার মোড়ে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের ওপর নিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়।


গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা শরিফ ইসলাম জানান, রাসেল মোল্লা (৩০) নামের একজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় ফরিদপুরে পাঠানো হয়। খবর নিয়ে জানতে পেরেছেন, সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা গেছেন।

ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ডাকাতি, গাড়িসহ গ্রেফতার ৭

প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ০৪ সেপ্টেম্বর , ২০২৫
ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ডাকাতি, গাড়িসহ গ্রেফতার ৭

বগুড়ার শাজাহানপুরে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ফার্নিচার বোঝাই পিকআপে ডাকাতির সঙ্গে জড়িত সাত ডাকাত গ্রেফতার হয়েছে। ডাকাতিতে ব্যবহৃত একটি প্রাইভেট কার ও একটি বার্মিজ চাকু উদ্ধার করা হয়েছে।

গ্রেফতার ডাকাতরা হচ্ছে— উপজেলার রহিমাবাদ উত্তরপাড়ার শফিকুল ইসলামের ছেলে মো. রাতুল, সদরের সাতশিমুলিয়া গ্রামের আলমগীর প্রামানিকের ছেলে সুমন প্রামানিক, শহরের সুলতানগঞ্জপাড়ার গোলাম পাশা পুটুর দুই ছেলে সাব্বির পাশা শাওন ও মোস্তফা পাশা শ্যামল, মালগ্রাম উত্তরপাড়ার কামাল মিয়ার ছেলে কালাম ওরফে সুরমা কালাম ওরফে জামাল, নিশিন্দারা মধ্যপাড়ার সাজ্জাদের ছেলে রাসেল আহম্মেদ এবং সাবরুল কারিগরপাড়ার বিপুল হোসেনের ছেলে তারেক হোসেন।

মৌলভীবাজার সদরের জগন্নাথপুর গ্রামের সিরাজ মিয়ার ছেলে পিকআপের মালিক আরিফ হোসেন (৪০) এজাহারে উল্লেখ করেন, মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার বিক্রমপুর কামারগাঁও গ্রামের জালাল বেপারির ছেলে আল আমিন (৩৫) ও হেলপার রাজবাড়ীর পাংশ উপজেলার গুদিবাড়ী গ্রামের মো. নুরুর ছেলে মো. রফিক দেশের বিভিন্ন স্থানে ভাড়ায় পিকআপে মালামাল পরিবহণ করেন।

তারা ১২ আগস্ট রাত সোয়া ১২টার দিকে ঢাকা মহানগরের কেরানীগঞ্জ উপজেলার বছিলা এলাকা থেকে এক লাখ ২০ হাজার টাকা মূল্যের ফার্নিচার লোড করেন। এরপর ফার্নিচারগুলো গাইবান্ধা ও দিনাজপুরে পৌঁছে দেওয়ার জন্য রওনা দেন।

তারা রাত সাড়ে ৪টার দিকে বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার আড়িয়া ইউনিয়নের রহিমাবাদ বি-ব্লক এলাকায় ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের ওভারপাসের উপরে পৌঁছেন।

এ সময় তিনটি প্রাইভেটকারে অজ্ঞাত কয়েকজন পুলিশের ব্যবহৃত লাল সিগন্যাল লাইট ব্যবহার করে পিকআপ থামাতে বাধ্য করে। এ সময় ১৪-১৫ জন ডাকাত নিজেদের ডিবি পুলিশের লোকজন পরিচয় দেয় ও চালক আল আমিনের হাতে হাতকড়া পড়ায়।

এরপর পিকআপের চালক ও হেলপার রফিককে প্রাইভেট কারে তুলে গামছা দিয়ে চোখ ও হাত বেঁধে ফেলে। চিৎকার করলে তাদের মারপিট ও হত্যার হুমকি দেওয়া হয়।

ডাকাতরা পিকআপ চালক ও হেলপারের কাছ থেকে দুটি মোবাইল ফোন, নগদ তিন হাজার টাকা কেড়ে নেয়। ডাকাতদল তাদের নিয়ে প্রায় আধা ঘণ্টা গাড়ি চালিয়ে ভোর ৫টার দিকে বগুড়া সদরের ধনিয়াতলা এলাকায় দ্বিতীয় বাইপাস মহাসড়কে পৌঁছে।

সেখানে হাত ও চোখ বাঁধা অবস্থায় চালক ও হেলপারকে মহাসড়কের পাশে গর্তে ফেলে দেয় ডাকাতরা। এরপর তারা সাড়ে চার লাখ টাকা মূল্যের পিকআপ ও সোয়া লাখ টাকা মূল্যের ফার্নিচার নিয়ে পালিয়ে যায়।

পিকআপের মালিক আরিফ হোসেন গত ১৩ আগস্ট বগুড়ার শাজাহানপুর থানায় একটি মামলা করেন। থানার এসআই রাসেল আহম্মেদকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়।

রাত ১১টার দিকে সন্দিগ্ধ আসামি মো. রাতুলকে গ্রেফতার করে। তার হেফাজত থেকে ডাকাতির কাছে ব্যবহৃত একটি প্রাইভেট কার জব্দ করা হয়। রাতুলের দেওয়া তথ্যমতে, র্যাব ও শাজাহানপুর থানা পুলিশ ১৭ আগস্ট রাতে সন্দিগ্ধ আসামি সুমন প্রামানিক, সাব্বির পাশা শাওন, তার ভাই মোস্তফা পাশা শ্যামলকে গ্রেফতার করে।

আসামিদের পুলিশ হেফাজতে নিয়ে নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা ফার্নিচার ডাকাতির কথা স্বীকার করে। তাদের দেওয়া তথ্য অনুসারে র্যাব ও শাজাহানপুর থানা পুলিশ ৩ সেপ্টেম্বর রাতে কালাম ওরফে সুরমা কালাম ওরফে জামাল, রাসেল আহম্মেদ এবং তারেক হোসেনকে গ্রেফতার করে। তাদের কাছে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত একটি বার্মিজ চাকু পাওয়া যায়।

বৃহস্পতিবার দুপুরে শাজাহানপুর থানার ওসি শফিকুল ইসলাম পলাশ জানান, গ্রেফতার আসামিদের মধ্যে রাতুলের বিরুদ্ধে মাদকসহ বিভিন্ন ধারায় পাঁচটি, সাব্বির পাশা শাওনের বিরুদ্ধে তিনটি, মোস্তফা পাশা শ্যামলের বিরুদ্ধে ছয়টি, কালাম ওরফে সুরমা কালাম ওরফে জামালের বিরুদ্ধে ১১টি, রাসেল আহম্মেদের বিরুদ্ধে চারটি এবং তারেক হোসেনের বিরুদ্ধে সাতটি মামলা রয়েছে। 

আমি ভার্জিন : মেঘনা আলম

প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ০৪ সেপ্টেম্বর , ২০২৫
আমি ভার্জিন : মেঘনা আলম
তথ্যসূত্র অনুযায়ী, মডেল ও অ্যাক্টিভিস্ট মেঘনা আলম এবং সৌদি রাষ্ট্রদূত ইসা ইউসুফ ইসা আল দুহাইলের মধ্যে সম্পর্ক ছিল। মেঘনা আলম দাবি করেছিলেন যে রাষ্ট্রদূত তাকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিলেন, কিন্তু তিনি সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন কারণ রাষ্ট্রদূত বিবাহিত ছিলেন

। মেঘনার এই মন্তব্যের জেরে বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের কূটনৈতিক সম্পর্কে টানাপোড়েন দেখা দিতে পারে এমন অভিযোগে তাকে এপ্রিল ২০২৫-এ গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। 

 
১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ তারিখে একটি ইনস্টাগ্রাম পোস্টে মেঘনা বলেছিলেন যে তিনি কোনো পুরুষের সঙ্গে সম্পর্কে ছিলেন না। তিনি জামিনে আছেন এবং সৌদি রাষ্ট্রদূতের কোর্টে উপস্থিত না হওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। 
 
সুতরাং, উল্লিখিত দাবিটি সরাসরি সত্য নয়। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম এবং মেঘনা আলমের নিজের মন্তব্য অনুযায়ী, তিনি এবং সৌদি রাষ্ট্রদূতের মধ্যে সম্পর্ক ছিল। তবে, তিনি সম্প্রতি একটি ইনস্টাগ্রাম পোস্টে এই দাবি অস্বীকার করেছেন। 

গুমের শিকার ৭ পরিবারের জন্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলে দিল বিএনপি

প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ০৪ সেপ্টেম্বর , ২০২৫
গুমের শিকার ৭ পরিবারের জন্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলে দিল বিএনপি

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কারামুক্তি দিবস উপলক্ষে রাজধানীর বংশালে গুমের শিকার ৭ পরিবারের স্বাবলম্বিতার জন্য একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলেছে দলটি।

নতুন উদ্যোগ হিসেবে বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) উদ্বোধন করা হলো একটি অনলাইন শপ ও শোরুমের। ‘ফ্যাশন পার্ক’ নামের এই প্রতিষ্ঠানটির মাধ্যমে গুম হওয়া পরিবারের সদস্যরা ব্যবসা পরিচালনা করবেন।

বিকালে রাজধানীর বংশাল নতুন চৌরাস্তা ২২৮/২২৯, নর্থ সাউথ রোড, শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম সরণিতে (বিএনপি ক্লাবের বিপরীত পাশে) শোরুমটি উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধন করেন গুমের শিকার সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ছেলে হুম্মাম কাদের চৌধুরী এবং যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ইসহাক সরকার।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে হুম্মাম কাদের চৌধুরী বলেন, ‘গুম পরিবারের সদস্যদের সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষা আমার নেই। তবে আমি বলতে চাই, বাংলাদেশের প্রকৃত হিরো তারাই ছিলেন। যারা গুম হয়েছেন, তাদের সঠিক তদন্তের মাধ্যমে বিচার হবেই, ইনশাআল্লাহ।’

ইসহাক সরকার বলেন, ‘আমাদের সহকর্মীরা ১২-১৩ বছর ধরে গুমের শিকার। আজও তাদের কোনো খোঁজ মেলেনি। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে এই শোরুম দেওয়া হয়েছে, যাতে তাদের পরিবার অন্তত ন্যূনতমভাবে চলতে পারে। আমরা বিএনপি ও বাংলাদেশের জনগণের উদ্দেশ্যে আহ্বান জানাই— সবাই যেন এখানে কেনাকাটা করেন। এতে পরিবারগুলো টিকে থাকতে পারবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আগামী জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি ক্ষমতায় আসবে ইনশাআল্লাহ। তখন যারা গুমের সঙ্গে জড়িত তাদেরকে জনগণের সামনে এনে বিচারের মুখোমুখি করা হবে। শেখ হাসিনাকে দেশে এনে জনগণের সামনে বিচারের আওতায় আনতে হবে।’

এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য হলো বংশাল ও সূত্রাপুর থানার গুমের শিকার পরিবারগুলোকে স্বাবলম্বী করা। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত পরিবারের সদস্যরা যুগান্তরকে জানালেন তাদের হৃদয়বিদারক অভিজ্ঞতা এবং তাদের একটাই দাবি— ‘আমরা বিচার চাই’।

মো. পারভেজ হোসেন: ২০১৩ সালের ২ ডিসেম্বর শাহবাগ থেকে গুম হন তিনি। দীর্ঘ ১২ বছরেও তার কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। স্ত্রী ফারজানা আক্তার কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘প্রতিদিন তার জন্য অপেক্ষা করি। সন্তানদের নিয়ে একা একা জীবন চালাতে হচ্ছে। এই কষ্ট ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। আমরা ন্যায়বিচার চাই।

সেলিম রেজা পিন্টু: সূত্রাপুর থানা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি সেলিম রেজা পিন্টু ২০১৩ সালের ১১ ডিসেম্বর গুম হন। বড় ভাই ইসলাম রেজা যুগান্তরকে বলেন, ‘এত বছর হয়ে গেল তবুও ভাইয়ের কোনো খবর নেই। প্রতিদিন মায়ের চোখে পানি দেখি। পরিবারের যন্ত্রণা এখনো শেষ হয়নি। আমরা শুধু চাই, সত্য প্রকাশ হোক আর বিচার হোক।’

মো. মাহফুজুর রহমান সোহেল: বংশাল থানা ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি সোহেল একই দিনে গুম হন। তার সন্তানরা এখনো বাবার খোঁজে। সাড়ে ১১ বছরের মেয়ে সাদিকা সরকার শাফা কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলে, ‘আমার বন্ধুদের বাবা-মা আছে, কিন্তু আমার বাবা নেই। আমি শুধু চাই, বাবাকে আবার ফিরে পেতে। আমরা বিচার চাই।’

মো. চঞ্চল কাজী: বংশাল থানা ছাত্রদলের সদস্য মো. চঞ্চল কাজীও ২০১৩ সালের ২ ডিসেম্বর গুম হন। স্ত্রী রেশমা আক্তার বলেন, ‘আজও রাতে ঘুমাতে পারি না। স্বামীর অনিশ্চিত ভাগ্যের কথা ভেবে প্রতিদিন ভয়ে আর শোকে দিন কাটে। আমরা বিচার চাই, আমাদের স্বামীরা যেন আর অজানার অন্ধকারে হারিয়ে না যান।’

হাবিবুল বাসার জহির: বংশাল থানা ৩৫ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি জহির শিশু পার্ক এলাকা থেকে সাদা পোশাকধারীদের হাতে গুম হন। পরিবারের সদস্যরা বলেন, ‘একসঙ্গে চারজনকে তুলে নেওয়ার পর থেকে তাদের কোনো খোঁজ নেই। আমরা প্রতিদিন অপেক্ষা করি, কিন্তু ফিরিয়ে আনে না কেউ। আমরা বিচার চাই।’

মো. সম্রাট মোল্লা: সূত্রাপুর থানা ছাত্রদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সম্রাট মোল্লা ২০১৩ সালের ২৮ নভেম্বর গুম হন। তার পরিবারের সদস্যরা বলেন, ‘একদিন স্বাভাবিকভাবে বাড়ি থেকে বের হয়েছিলেন, কিন্তু আর ফেরেননি। আজও তার কোনো খোঁজ নেই। আমরা বিচার চাই, যাতে ভবিষ্যতে আর কোনো পরিবারকে এই যন্ত্রণা সহ্য করতে না হয়।’

খালেদ হাসান সোহেল: সূত্রাপুর থানা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি খালেদ হাসান সোহেল একই দিনে চকবাজার এলাকায় কারাগারের ফটকের সামনে থেকে তুলে নেওয়া হয়। পরিবারের সদস্যরা বলেন, ‘যেদিন থেকে তাকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, সেদিন থেকেই ঘরে শুধু কান্না। কারও কাছে কোনো জবাব নেই। আমরা বিচার চাই, সত্য প্রকাশ হোক।’

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বংশাল থানা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান যুবদল নেতা অ্যাডভোকেট মো. রাশেদ, বংশাল থানা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান দিপু, ভারপ্রাপ্ত সদস্যসচিব এমএ মান্নান হীরা, সাবেক সদস্যসচিব শামসুর রহমান রকিব, কোতোয়ালি থানা ছাত্রদলের আহ্বায়ক দ্বীন ইসলাম, কোতোয়ালি থানা যুবদল নেতা রায়হান সেন্টু, যুবদল নেতা মো. পারভেজসহ বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের বহু নেতাকর্মী।