শুক্রবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ট্রাম্পের শীতলতায় চীন-রাশিয়ার দিকে ঝুঁকছেন মোদি

প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ০৪ সেপ্টেম্বর , ২০২৫
ট্রাম্পের শীতলতায় চীন-রাশিয়ার দিকে ঝুঁকছেন মোদি
চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং আয়োজিত সাম্প্রতিক সম্মেলনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ছবি: সংগৃহীত

চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং আয়োজিত সাম্প্রতিক সম্মেলনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের হাত ধরে হাসিমুখে দেখা যাওয়ার ছবি নতুন প্রশ্ন তুলেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, যুক্তরাষ্ট্র বহুদিন ধরেই ভারতকে নিজেদের কূটনৈতিক প্রভাববলয়ে টানার চেষ্টা করছিল, কিন্তু ট্রাম্পের নীতির কারণে সে প্রচেষ্টা এখন দুর্বল হয়ে পড়ছে।

দীর্ঘদিন নিরপেক্ষ নীতি অনুসরণকারী ভারতকে চীন ও রাশিয়ার প্রতিরোধশক্তি হিসেবে গড়ে তুলতে চেয়েছিল ওয়াশিংটন। কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ট্রাম্প প্রশাসনের ৫০% শুল্ক আরোপ, সস্তা রাশিয়ান তেল কেনায় নয়াদিল্লিকে প্রকাশ্যে সমালোচনা—এসব পদক্ষেপে দুই দেশের সম্পর্কে টানাপোড়েন বেড়েছে।

এদিকে চীন, রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়ার নেতাদের একসঙ্গে মঞ্চে দাঁড়ানো এবং সেখানে মোদির উপস্থিতি যুক্তরাষ্ট্রের জন্য কূটনৈতিক ধাক্কা হিসেবে দেখা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞ অ্যাশলি টেলিস মন্তব্য করেছেন, ‘মার্কিন-ভারত সম্পর্ক এক নিম্নমুখী চক্রে আটকে গেছে, কারণ দুই নেতা সম্পর্ক পুনর্গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যক্তিগত উদ্যোগ নিতে চাইছেন না।’

ভারতও ট্রাম্প প্রশাসনের নানা মন্তব্যে ক্ষুব্ধ হয়েছে। পাকিস্তানকে সম্মান দেওয়া, কাশ্মীর ইস্যুতে মধ্যস্থতার দাবি এবং দিল্লির প্রস্তাবিত বাণিজ্য সমাধান প্রত্যাখ্যান—এসবকে তারা ‘অন্যায্য’ বলে মনে করছে।


ব্রুকিংস ইনস্টিটিউশনের বিশেষজ্ঞ তানভি মাদান বলেন, ‘যখন ট্রাম্প নিজেই পুতিনকে রাষ্ট্রীয় অভ্যর্থনা দিয়েছেন ও শির সঙ্গে বৈঠকের প্রস্তুতি নিচ্ছেন, তখন ভারতের ওপর চাপ সৃষ্টি করা উল্টো নয়াদিল্লির কৌশলগত স্বায়ত্তশাসনের আকাঙ্ক্ষা আরও বাড়িয়ে দেবে।’

ট্রাম্পের মুখপাত্র দাবি করেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী মোদি ও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের মধ্যে সম্মানজনক সম্পর্ক রয়েছে। কূটনীতি, প্রতিরক্ষা ও বাণিজ্যে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে।’

কিন্তু ভারতীয় কর্মকর্তারা বেনামে জানিয়েছেন, দিল্লি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকলেও সাম্প্রতিক সময় চীনের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার প্রক্রিয়া চলছে, যা সরাসরি ওয়াশিংটনকে লক্ষ্য করে নয়। উল্লেখযোগ্য যে, সীমান্ত সংঘর্ষ ও দীর্ঘ বৈরিতার পর সাত বছরে এটাই মোদির প্রথম চীন সফর।


ট্রাম্প শুরুতে ভারতকে কাছে টানতে ‘হাউডি মোদি’ অনুষ্ঠানসহ নানা পদক্ষেপ নিয়েছিলেন এবং কোয়াড (ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, জাপান ও অস্ট্রেলিয়ার জোট) পুনরুজ্জীবিত করেছিলেন। কিন্তু শিগগিরই বাণিজ্য ঘাটতি, ভিসা নীতি ও অভিবাসন ইস্যুতে তিনি নয়াদিল্লির প্রতি কঠোর অবস্থান নেন।

ভারত নভেম্বর মাসে কোয়াড সম্মেলন আয়োজনের প্রস্তুতি নিচ্ছে, যেখানে চীনের বিরুদ্ধে নিরাপত্তা ইস্যুতে জোর দেওয়া হবে। কিন্তু এখনো ট্রাম্পের ভারত সফরের কোনো তারিখ নির্ধারিত হয়নি। বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্প মূলত চীনের সঙ্গে বড় বাণিজ্য চুক্তির দিকে নজর দিচ্ছেন।

সাবেক মার্কিন কর্মকর্তা ব্রেট ব্রুয়েনের ভাষায়, ‘ভারত এমন একটি দেশ যাকে ট্রাম্পের ইচ্ছায় সহজে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না। তাদের কাছে বিকল্প রয়েছে।’

নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা অলির পদত্যাগ

প্রকাশ: মঙ্গলবার, ০৯ সেপ্টেম্বর , ২০২৫
নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা অলির পদত্যাগ

দুর্নীতিবিরোধী বিক্ষোভ তীব্র হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পদত্যাগ করেছেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা অলি। প্রধানমন্ত্রী অলি স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বর্তমান সংকটের সাংবিধানিক সমাধানের পথ প্রশস্ত করার জন্য তিনি পদত্যাগ করেছেন। রাজধানী কাঠমাণ্ডু এবং নেপালজুড়ে সকাল থেকেই বিক্ষোভ চলছে।

প্রতিবাদকারীরা প্রধানমন্ত্রী অলির পদত্যাগ দাবি করে সকাল থেকেই কালঙ্কি এলাকায় সড়ক অবরোধ ও টায়ার জ্বালানোর ঘটনা ঘটায়।
বেশ কয়েকজন উচ্চপদস্থ রাজনীতিকের বাসভবনে হামলা, ভাঙচুর ও আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে অলি এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী শের বাহাদুর দেউবার বাসভবনও রয়েছে। রাজনৈতিক দলের সদর দপ্তরও লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে। এ ছাড়া তিনজন মন্ত্রী পদত্যাগও করেছেন।

সিভিল সার্ভিস হাসপাতালের নির্বাহী পরিচালক মোহন রেগমি বিবিসিকে বলেছেন, মঙ্গলবারের বিক্ষোভে দুজন মারা গেছেন।
তিনি বলেন, বর্তমানে ৯০ জন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

অন্যদিকে নেপালে দেশব্যাপী তরুণদের বিক্ষোভ অব্যাহত থাকায় অভ্যন্তরীণ বিমান চলাচল বন্ধ রয়েছে। নেপালের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের মুখপাত্র জ্ঞানেন্দ্র ভুল বিবিসির নেপালি পরিষেবাকে বলেছেন, ‘নেপালের রাজধানীর বাইরের বিমানবন্দরগুলো নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে না পারায়, ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে অভ্যন্তরীণ বিমান চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে।’

এ ছাড়া কাঠমাণ্ডু বিমানবন্দরের দক্ষিণ রুট, কোটেশ্বর-কান্দাগরী-বালকোট তীব্র ধোঁয়ার কারণে দৃশ্যমানতা ব্যাপকভাবে প্রভাবিত হওয়ায় বর্তমানে পাঁচটি আন্তর্জাতিক বিমান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
ভুল বলেন, ‘অন্যথায় নিরাপত্তা এবং প্রশাসনিক কারণে বিমানবন্দর বন্ধ করার কোনো পরিকল্পনা নেই। তবে বিমান চলাচল প্রভাবিত হয়েছে।’

সোমবার পুলিশ ও বিক্ষোভকারীদের মধ্যে সংঘর্ষে ১৯ জন নিহত হওয়ার পর জারি করা কারফিউ অমান্য করে নেপালজুড়ে বিক্ষোভ তীব্র আকার ধারণ করেছে। 

সূত্র : বিবিসি

বিক্ষোভে উত্তাল নেপাল, পার্লামেন্টে ঢুকে পড়েছে জনতা

প্রকাশ: সোমবার, ০৮ সেপ্টেম্বর , ২০২৫
বিক্ষোভে উত্তাল নেপাল, পার্লামেন্টে ঢুকে পড়েছে জনতা

নেপালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্ল্যাটফর্ম বন্ধ ও সরকারের দুর্নীতি বিরুদ্ধে জেন জি প্রজন্মের নেতৃত্বে শুরু হওয়া আন্দোলন অনলাইন থেকে সড়কে পৌঁছেছে। 

সোমবার সকালের দিকে দেশটির রাজধানী কাঠমান্ডুতে শুরু হওয়া এই বিক্ষোভ ভয়াবহ সহিংসতায় রূপ নিয়েছে। হাজার হাজার বিক্ষোভকারীরা নিরাপত্তা বাহিনীর বাধা উপেক্ষা করে রাজধানীতে অবস্থিত পার্লামেন্ট ভবনে ঢুকে পড়েছেন।

এ সময় বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে গুলি, টিয়ার গ্যাস, জলকামান ছুড়েছে নিরাপত্তা বাহিনী। এ ঘটনায় অন্তত তিনজন নিহত এবং শতাধিক আহত হয়েছেন।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনীর সদস্যদের মোতায়েনের পাশাপাশি রাজধানীতে কারফিউ জারি করেছে দেশটির সরকার।

কাঠমান্ডু থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, সরকার ২৬টি অনিবন্ধিত প্ল্যাটফর্ম ব্লক করার পর শুক্রবার থেকে ফেসবুক, ইউটিউব ও এক্সসহ বেশ কয়েকটি সোশ্যাল মিডিয়া সাইট ব্যবহার করা যাচ্ছে না। যার ফলে নেপালের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারীরা ক্ষুব্ধ ও বিভ্রান্ত হয়েছেন।

ইনস্টাগ্রামের মতো জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে নেপালে লাখ লাখ ব্যবহারকারী রয়েছেন— যারা বিনোদন, সংবাদ ও ব্যবসার জন্য এই মাধ্যমগুলোর ওপর নির্ভর করে থাকে।

জাতীয় পতাকা উড়িয়ে, জেনারেশন জেড বিক্ষোভকারীরা জাতীয় সঙ্গীতের মাধ্যমে প্রতিবাদ শুরু করে এবং তারপরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ওপর নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে স্লোগান দেয়।


২৪ বছর বয়সী ছাত্রী যুজন রাজভান্ডারী বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো নিষেধাজ্ঞার কারণে আমরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছি। কিন্তু এটাই একমাত্র কারণ নয়, যে আমরা এখানে জড়ো হয়েছি।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমরা নেপালে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ নেওয়া দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছি।’

২০ বছর বয়সী আরেক ছাত্রী ইক্ষমা তুমরোক জানান, তিনি সরকারের ‘কর্তৃত্ববাদী মনোভাবের’ বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছেন।

তিনি এএফপি’কে বলেন,  ‘আমরা পরিবর্তন দেখতে চাই। অন্যরা এটা সহ্য করেছে, কিন্তু আমাদের প্রজন্মের সঙ্গেই এই ‘কতৃত্ববাদী মনোভাবের’ অবসান ঘটাতে হবে।’

নিষেধাজ্ঞার পর থেকে, সাধারণ নেপালিদের সংগ্রামের সঙ্গে রাজনীতিবিদদের সন্তানদের বিলাসবহুল জিনিসপত্র ও ব্যয়বহুল ছুটি কাটানোর তুলনামূলক ভিডিও টিকটকে ভাইরাল হয়েছে, যা এখনও চলছে।

প্রতিবাদকারী ভূমিকা ভারতী বলেন, ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে বিদেশে আন্দোলন হয়েছে এবং তারা (সরকার) ভয় পাচ্ছে যে, এখানেও এমনটা ঘটতে পারে’।

গত মাসে মন্ত্রিসভা সিদ্ধান্ত নেয়, সংশ্লিষ্ট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম কোম্পানিগুলোকে সাত দিনের মধ্যে নেপালে নিবন্ধন করতে হবে, যোগাযোগের জন্য প্রতিনিধি রাখতে হবে এবং অভিযোগ ও নিয়ম মানা বিষয়ক কর্মকর্তাও নিয়োগ দিতে হবে।

গত বছরের সেপ্টেম্বরে সুপ্রিম কোর্টের আদেশের পরে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

রোববার এক বিবৃতিতে সরকার বলেছে, তারা চিন্তা ও মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে সম্মান করে এবং ‘তাদের সুরক্ষা ও নিরবচ্ছিন্ন ব্যবহারের জন্য একটি পরিবেশ তৈরি করতে’ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

নেপাল অতীতে জনপ্রিয় অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলোতে অ্যাক্সেস সীমাবদ্ধ করেছে।

অনলাইন জালিয়াতি ও অর্থ পাচার বৃদ্ধির কথা উল্লেখ করে সরকার জুলাই মাসে টেলিগ্রাম মেসেজিং অ্যাপটিতে অ্যাক্সেস বা ব্যবহার বন্ধ করে দেয়।

প্ল্যাটফর্মটি নেপালি নিয়ম মেনে চলতে সম্মত হওয়ার পর, গত বছরের আগস্টে টিকটকের ওপর থেকে নয় মাসের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়।

পদত্যাগ করছেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী ইশিবা

প্রকাশ: রোববার, ০৭ সেপ্টেম্বর , ২০২৫
পদত্যাগ করছেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী ইশিবা

জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবা ক্ষমতাসীন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন। গত জুলাইয়ে দেশটির ক্ষমতাসীন জোটের ঐতিহাসিক পরাজয়ের পর কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই তিনি পদত্যাগের এই ঘোষণা দিলেন।

জুলাইয়ের নির্বাচনে পরাজয়ের পর শিগেরু ইশিবা তার দলের মধ্য থেকে ওঠা পদত্যাগের আহ্বান ঠেকিয়ে রেখেছিলেন। তখন তিনি বলেছিলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে স্বাক্ষরিত শুল্ক চুক্তিটি যেন যথাযথভাবে বাস্তবায়িত হয়, তা তিনি নিশ্চিত করতে চান। তবে এতকিছুর পর রোববার তার পদত্যাগের সিদ্ধান্ত সামনে এলো। খবর আলজাজিরার।

গত বছর দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে এই ৬৮ বছর বয়সী রাজনীতিবিদ পার্লামেন্টের উভয়কক্ষে তার জোটের সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়েছিলেন। অক্টোবরের এক তিক্ত নির্বাচনি পরাজয়ে তারা শক্তিশালী নিম্ন কক্ষেও তাদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারায়।

ভোটারদের ক্রমবর্ধমান জীবনযাত্রার ব্যয় নিয়ে উদ্বেগের কারণে এই পরাজয়গুলো ইশিবার সরকারের জন্য তাদের নীতিমালা বাস্তবায়ন করার কাজ এগিয়ে নেওয়াকে কঠিন করে তুলেছিল।

দেশের ক্রমবর্ধমান রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার মধ্যে ইশিবা তার দলের ভেতর থেকেই বেশিরভাগ ডানপন্থি সদস্যদের সমর্থন হারিয়ে পদত্যাগের ডাকের মুখোমুখি হয়েছেন। ইশিবার বিরোধীরা জুলাইয়ের ভোটের ফলাফলের জন্য তাকে দায় নিতেও আহ্বান জানান।

গণমাধ্যমের বিভিন্ন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জাপানের কৃষিমন্ত্রী এবং একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শনিবার সন্ধ্যায় ইশিবার সঙ্গে দেখা করে তাকে পদত্যাগের জন্য রাজি করান।

যদিও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় তার পদত্যাগের বিষয়ে এখনও কোনো মন্তব্য করেনি, তবে জাপানি সরকার নিশ্চিত করেছে–ইশিবা আজ রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) দিনের শেষভাগে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলবেন। এলডিপির প্রাথমিক নেতৃত্ব নির্বাচন হবে কিনা, সে বিষয়ে দলের ভেতরে ভোট হওয়ার একদিন আগে ইশিবার এই সিদ্ধান্ত এলো।

ইশিবার সম্ভাব্য উত্তরসূরিদের মধ্যে রয়েছেন রক্ষণশীল সানাই তাকাইচি, যিনি গত বছর এলডিপির রান-অফ নির্বাচনে ইশিবার কাছে অল্পের জন্য হেরেছিলেন। এ ছাড়া রয়েছেন বর্তমান কৃষিমন্ত্রী শিনজিরো কোইজুমি যার পরিবার দীর্ঘকাল ধরে জাপানের রাজনীতিতে জড়িত।

এ বিষয়ে মেইজি ইয়াসুদা রিসার্চ ইনস্টিটিউটের অর্থনীতিবিদ কাজুতাকা মায়েদা মন্তব্য করতে গিয়ে বলেন, ‘এলডিপির বারবার নির্বাচনি পরাজয়ের পর ইশিবার ওপর রাজনৈতিক চাপ বাড়ার কারণে তার পদত্যাগ অনিবার্য ছিল।’

মায়েদা আরও বলেন, সম্ভাব্য উত্তরসূরিদের ক্ষেত্রে, কোইজুমি ও তাকাইচিকে সবচেয়ে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসাবে দেখা হচ্ছে।

এই ঘটনাগুলো ঘটেছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জাপানি গাড়ি আমদানির ওপর শুল্ক ২৭ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে ১৫ শতাংশে নামিয়ে আনার নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করার মাত্র কয়েক দিন পর। জুলাইয়ে এই চুক্তিটি ঘোষিত হয়েছিল।

এই চুক্তির শর্তানুযায়ী, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বেশিরভাগ জাপানি রপ্তানি পণ্যের ওপর ১৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক নিয়ে এক্সে মোদির পোস্ট

প্রকাশ: শনিবার, ০৬ সেপ্টেম্বর , ২০২৫
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক নিয়ে এক্সে মোদির পোস্ট

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের বিষয়ে নিজের অবস্থান জানিয়ে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আজ শনিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে একটি পোস্ট দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, তাঁর দেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে এখনো ‘বেশ ইতিবাচক’ সম্পর্ক রয়েছে।

মোদি লিখেছেন, ‘আমার সম্পর্কের বিষয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের আবেগ-অনুভূতি ও ইতিবাচক মূল্যায়নের প্রশংসা করছি। এবং আমরা পুরোপুরি এর প্রতিদান দেব।’

পোস্টে মোদি আরও লেখেন, ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে খুবই ইতিবাচক এবং ভবিষ্যৎমুখী সর্বাত্মক বৈশ্বিক কৌশলগত অংশীদারত্ব রয়েছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর ব্যক্তিগত বন্ধুত্বের কথা আবারও সামনে টেনে আনার পর এমন মন্তব্য করেন মোদি। মন্তব্যটি এমন সময়ে করা হলো, যখন কিনা ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কে টানাপোড়েন চলছে।

    গত সপ্তাহে মোদি সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশনের বৈঠকে যোগ দিতে চীনে যান। এটি ছিল সাত বছর পর তাঁর প্রথম সে দেশ সফর, যা দুই এশীয় শক্তির মধ্যে সম্পর্কের কিছুটা উষ্ণতা ফেরার ইঙ্গিত দেয়।

ওয়াশিংটন সম্প্রতি ভারতীয় পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক বসিয়েছে। তাদের অভিযোগ, রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কেনার মধ্য দিয়ে ইউক্রেনে প্রাণঘাতী হামলা চালাতে মস্কোকে সহযোগিতা করছে নয়াদিল্লি।

তবে ট্রাম্প ও মোদি—দুজনই জনতুষ্টবাদী নেতা। ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদ থেকেই দুজনের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে ওঠে।

    ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, তিনি সব সময় মোদির বন্ধু থাকবেন। চীনের কাছে ভারতকে হাতছাড়া করে ফেলেছেন বলে আগে মন্তব্য করলেও পরে সুর নরম করে ট্রাম্প বলেন, ‘ভারত আর যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বিশেষ সম্পর্ক আছে। দুশ্চিন্তার কিছু নেই।’

এর আগে ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, তিনি সব সময় মোদির বন্ধু থাকবেন। চীনের কাছে ভারতকে হাতছাড়া করে ফেলেছেন বলে আগে মন্তব্য করলেও পরে সুর নরম করে ট্রাম্প বলেন, ‘ভারত আর যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বিশেষ সম্পর্ক আছে। দুশ্চিন্তার কিছু নেই।’

গত সপ্তাহে মোদি সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশনের বৈঠকে যোগ দিতে চীন সফরে যান। এটি ছিল সাত বছর পর তাঁর প্রথম সেদেশ সফর, যা দুই এশীয় শক্তির মধ্যে সম্পর্কের কিছুটা উষ্ণতা ফেরার ইঙ্গিত দেয়।


তবে মোদির এ সফরে ট্রাম্পকে বিরক্ত বলে মনে হয়েছে। কারণ, তিনি পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার কৃতিত্ব নিতে চাইছেন। গত মে মাসে দুই পারমাণবিক শক্তিধর প্রতিবেশীর মধ্যে কয়েক দশকের সবচেয়ে খারাপ সংঘাতের পর এমন প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন তিনি। তাঁর ভাষায়, এটা নোবেল পাওয়ার মতো কূটনীতি।

তবে কাশ্মীর ইস্যুতে ভারত কোনো তৃতীয় পক্ষের মধ্যস্থতা প্রত্যাখ্যান করেছে। আর তা ট্রাম্পকে ক্ষুব্ধ করেছে।

ভেনেজুয়েলাকে হুঁশিয়ারি ট্রাম্পের, সংলাপে আগ্রহী মাদুরো

প্রকাশ: শনিবার, ০৬ সেপ্টেম্বর , ২০২৫
ভেনেজুয়েলাকে হুঁশিয়ারি ট্রাম্পের, সংলাপে আগ্রহী মাদুরো

ভেনেজুয়েলার সামরিক বিমান মার্কিন বাহিনীর জন্য বিপজ্জনক হলে তা গুলি করে ভূপাতিত করার হুমকি দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প । এর কয়েক ঘণ্টা পর ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো ওয়াশিংটনের সঙ্গে আলোচনার আহ্বান জানিয়েছেন। খবর বার্তা সংস্থা এএফপির। 

সম্প্রতি ক্যারিবীয় সাগরে একটি সন্দেহভাজন ভেনেজুয়েলান মাদক পরিবহণকারী নৌকায় মার্কিন হামলার ঘটনায় দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা বেড়েছে। পেন্টাগনের অভিযোগ, ভেনেজুয়েলার সামরিক বিমান তাদের যুদ্ধজাহাজের কাছাকাছি উড়েছে, যা ‘মারাত্মক উসকানিমূলক’ ছিল।

স্থানীয় সময় শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, যদি তারা আমাদের বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে ফেলে, তবে সেগুলোকে গুলি করে নামানো হবে। এই হুমকির পরিপ্রেক্ষিতে ওয়াশিংটন পুয়ের্তো রিকোতে ১০টি অত্যাধুনিক এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান মোতায়েন করছে। ট্রাম্পের অভিযোগ, মাদুরো একটি মাদক চক্রকে মদদ দিচ্ছেন।

হোয়াইট হাউসের ডেপুটি চিফ অফ স্টাফ স্টিফেন মিলার মাদুরোকে ‘অভিযুক্ত মাদক পাচারকারী’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন, এই পদক্ষেপগুলো মাদক সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে একটি নতুন, আগ্রাসী কৌশল।

ভেনেজুয়েলার রেডিও ও টেলিভিশন চ্যানেলে সম্প্রচারিত এক বার্তায় মাদুরো বলেন, আমাদের মধ্যে যে বিভেদ রয়েছে, তা কোনোভাবেই সামরিক সংঘাতের দিকে নিয়ে যেতে পারে না। ভেনেজুয়েলা সবসময় আলোচনা ও সংলাপে ইচ্ছুক, তবে আমরা সম্মান দাবি করি।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক প্রস্তুতির জবাবে মাদুরো তার দেশকে ‘জাতীয় ভূখণ্ড রক্ষায় সশস্ত্র সংগ্রামের’ জন্য প্রস্তুত বলে ঘোষণা করেছেন। তিনি ভেনেজুয়েলার প্রায় ৩ লাখ ৪০ হাজার নিয়মিত সেনা এবং আট লাখের বেশি রিজার্ভ সেনাকে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। একইসঙ্গে তিনি ট্রাম্পের মাদক পাচার সংক্রান্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।